চাকরি থেকে বিদায়ে দিশেহারা অনুপ এখন সফল ব্যবসায়ী
দিপালী মিত্র, সোনারপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়ে ছিলেন। কয়েক বছর পর চাকরিটা চলে যায়। ততদিনে তার সংসার হয়ে গিয়েছে। জন্ম নিয়েছে এক ছেলে। হতাশ না হয়ে, ভেঙে না পড়ে বারুইপুর স্টেশনের পাশে কলেজ রোডের পাশে মাটিতে কাগজ পেতে কয়েকটি পুজোর সামগ্রি বিক্রি করে নতুনভাবে পথচলা শুরু করেছিলেন মুখার্জী দশকর্মা ভাণ্ডারে র মালিক অনুপ মুখাজী।
দিনটা ছিল সরস্বতী পূজা। বেচাকেনা ভালোই হলো। ঐদিনের পর থেকে তিনি ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। সেই থেকে অদ্যম উৎসাহ, উদ্দিপনা নিয়ে দিনের বেশিরভাগ সময় ও রাত পর্যন্ত ব্যবসায় উন্নতি করার জন্য পরিশম করে এখন উনি একজন সফল ব্যবসায়ী। কমলা ক্লাবের একটা ঘরে বেশ কিছু টাকা পূঁজি করে ভালো করে দোকান করেছেন।
অনুপ বাবু খুব মিশুকে মানুষ। ৮ থেকে ৮০ সবাই তার বন্ধু। সুমিষ্ট ব্যবহার, সবসময় মিষ্টি হাসি, মিষ্টি কথা, তাই দোকানে খরিদ্দার ও বেড়েছে , বিক্রী ও বেড়েছে। তিনি কখনো সরকারি সাহায্য পাননি। বাড়ি থেকে কোনো সাহায্য পাননি। সবটাই নিজেরা খেটে করেছেন। তিনি বললেন ব্যবসার জন্য পরিশ্রম করে তার স্বাস্থ্য অনেক খারাপ হয়ে গেছে। কিন্তু মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার। মিষ্টি হাসি, মিষ্টি কথা নষ্ট হয় নি। উনি বললেন তাঁর সংসারে একসময় খুব অভাব ছিলো। কিন্তু তাকে হঠাৎ করে দেখলে কেউ বুঝতে পারতো না। তার মুখে সবসময় হাসি থাকতো বলে। অনুপ বাবুর বাবা ঢ়াকুরিয়ায় একটি স্কুলে চাকরি করতেন। তবু ও তিনি বাবার কাছ থেকে কোনো সাহায্য নেননি। তিনি চেয়েছিলেন নিজের চেষ্টায় কিছু করতে। তার এই ব্যবসায় তাঁর স্ত্রী তাকে সাহায্য করেন।
আগে সংসার ও একমাত্র ছেলের পড়াশোনা খুব কষ্টে চলতো। এখন এই ব্যবসা থেকে অনেকের অন্নসংস্থান হয়।ব্যবসার জন্য পরিশ্রম করার পর যে টুকু সময় পান চেস খেলেন। তাঁর ছেলে ও পড়াশোনা র সঙ্গে সঙ্গে চেস খেলে। এখন তারা প্রতিষ্ঠিত খেলোয়াড়। পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন জেলায় এমনকি ভারতের নানা জায়গায় চেস খেলার প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করে চ্যাম্পিয়ান অনেক পুরস্কার ও জিতেছেন। সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে উনি ওনার ছেলে আরো বড় বড় জায়গায় খেলতে চান বলে জানালো। চেস খেলার ব্যপারে ওনাদের দুজনের ই খুব উৎসাহ। এছাড়া অনুপ মুখার্জী কাজের পর মাঝে মাঝে ক্লাবে গিয়ে তাস খেলেন। টিভি দেখেন। ব্যস এই টুকুই তার এত এনার্জির রসদ। বছরে দুই , একবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাইরে বেড়াতে যান। পরিবার কে আলাদা করে সময় দিতে হয় না। ওনার স্ত্রী দোকানে ই থাকেন। উনি বললেন নতুন যারা ব্যবসা করতে চাইছে বা কোনো কাজে সফল হতে চাইছে সদিচ্ছা ও পরিশ্রম করার মানসিকতা নিয়ে এগোলে একদিন সফলতা পাবেই। শুধু লক্ষ্য স্থির করে ঠিক পথে এগোতে হবে।


No comments