সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব ভবন নেই, স্থায়ী কোন উপাচার্য এবং অধ্যাপকও নেই, লাঠে উঠেছে পড়াশুনা, জেলা শাসকের অফিসের সামনে ছাত্র বিক্ষোভ
অনুরাধা পন্ডা, হলদিয়া : বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব কোন ভবন নেই। স্থায়ী উপাচার্য এবং কোন স্থায়ী অধ্যাপক নিয়োগ করা হয়নি। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লাঠে উঠেছে পড়াশুনা, জেলা শাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখালো ছাত্র ছাত্রীরা।
2011 সালে ক্ষমতায় আসার পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলে মহাত্মাগান্ধী বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা ঘোষনা করে রাজ্য সরকার। একটি কলেজের কয়েকটি রুম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন শুরুও হয়ে যায়। পাশাপাশি নতুন ভবন নির্মান শুরু হয়।
কিন্তু সরকারি অর্থ বরাদ্দ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ভবন নির্মান কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজে সরকারি অর্থ বরাদ্দ করা এবং উপাচার্য সহ সমস্ত শূন্য পদে স্থায়ী অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করা সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবনে দ্রুত পঠন পাঠন চালুর দাবিতে আজ তমলুকের নিমতৌড়িতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রশাসনিক দপ্তরে AIDSO র জেলা কমিটির পক্ষ থেকে ছাত্র বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন দেওয়া হয়।
আজকের কর্মসূচিতে AIDSO 'র পূর্ব মেদিনীপুর উত্তর সাংগঠনিক জেলার আহ্বায়ক নিরুপমা বক্সী বলেন —
" অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মীয়মান ভবনের কাজ শুরুর বিষয়ে আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শুরুর প্রথম অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদটি স্থায়ী ছিল, বাকি পূর্ণ সময়ের কোনো অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মীর পদে সরকার নিয়োগ করেন নি। কিন্তু এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদটিও চলে যায়, মাত্র তিন মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে একজন উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন। আর একরকম উপাচার্যহীন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন চূড়ান্ত অব্যবস্থার সম্মুখীন এবং তা ছাত্রছাত্রীদের মানসিকভাবেও বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। দৈনন্দিন কাজককর্মেও প্রবল সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের । এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো নিয়ে মিটিং এও মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় চালুর বিষয়ে কোনো আশার আলো দেখাতে পারেননি, বরং অর্থ বরাদ্দের বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়ে মহিষাদল রাজ কলেজে পঠন পাঠনের জন্য কক্ষ ব্যবহারের নিদান দিয়েছেন, যা শিক্ষিত মহলকে কার্যত হতাশ করেছে৷ বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে বারবার পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় উত্থাপন করলেও তিনি বিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে যাচ্ছেন ৷ পূর্ব মেদিনীপুরের মতো শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি অগ্রণী জেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা সত্ত্বেও এ সম্পর্কে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতার ও সদিচ্ছার অভাব সরকারের শিক্ষা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির প্রশ্নটিকে জনসমক্ষে স্পষ্ট করে দেয়। আমরা দাবি করছি, অবিলম্বে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করে স্থায়ী অধ্যাপক নিয়োগসহ পূর্ণাঙ্গ পঠনপাঠণের উপযুক্ত পরিকাঠামো দ্রুত গড়ে তুলতে হবে। এই দাবি না মানলে আমরা জেলা জুড়ে সর্বস্তরের মানুষদের সংঘবদ্ধ করে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবো৷"
আজকের এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন AIDSO পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য সুমন্ত সী, নিরুপমা বক্সী, দীপঙ্কর পাল প্রমুখ।

No comments