Latest Breaking

ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক, নোটারি শংসাপত্র অবৈধ : কেন্দ্র

বিশেষ প্রতিবেদন, কলকাতা : সুপ্রিম কোর্ট ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করেছে। একমাত্র সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত ম্যারেজ অফিসারদের কাছে আইন মেনে ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন করলে তবেই মিলবে ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট। বিয়ের শংসাপত্র দেওয়ার কোন আইনি এক্তিয়ার নোটারি পাবলিকদের নেই ,তা সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নোটারি পাবলিকরা বিয়ের শংসাপত্র ইস্যু করছে বলে অভিযোগ। চলতি বছরের ১০ অক্টোবর কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, এক নির্দেশিকা জারি করে  জানিয়ে দিয়েছে, একজন নোটারি পাবলিক ম্যারেজ অফিসার হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত নন। নোটারি পাবলিকের ইস্যু করা বিয়ের কোন শংসাপত্র আইনত বৈধ নয়। এই নির্দেশিকায় আরো বলা হয়েছে, যে সমস্ত নোটারি পাবলিক বিয়ের শংসাপত্র ইস্যু করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০০৮ সালে ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৯ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে অনলাইন ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন চালু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন পোর্টালে থানা ভিত্তিক ম্যারেজ অফিসারদের তালিকা ও ঠিকানা দেওয়া রয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের আইন  মন্ত্রক সার্কুলার বলা হয়েছে, আইন মেনে নির্ধারিত নিয়মেই বিয়ের নিবন্ধীকরণ করতে হবে। বিয়ের পর ভোটার কার্ড ও আধার কার্ডে স্বামীর ঠিকানা যুক্ত করার জন্য আদালত চত্বর বা অন্যত্র বসে থাকা নোটারি থেকে বিয়ের শংসাপত্র নিয়ে অনেকেই কাজ চালিয়ে নিচ্ছিলেন।এ কারণে সুপ্রিম কোর্ট ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করলেও অনেকেই সরকারি নিয়োগ প্রাপ্ত ম্যারেজ অফিসারদের কাছ থেকে ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন করার প্রয়োজন অনুভব করেননি। 

সম্প্রতি ভারতবর্ষের বেশ কয়েকটি আদালতে বিয়ের প্রমাণপত্র হিসেবে নোটারি  সার্টিফিকেট অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপরেই বিয়ের প্রমাণপত্র হিসেবে নোটারি সার্টিফিকেট যারা ইস্যু করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক।

পশ্চিমবঙ্গের  আইন মন্ত্রকের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিটি থানা এলাকায় এক বা একাধিক ম্যারেজ অফিসার রয়েছেন। কলকাতার এক ম্যারেজ অফিসার জানান, " সুপ্রিম কোর্ট বিয়ের রেজিস্ট্রেশন যে বাধ্যতামূলক করেছে এটা বেশিরভাগ নাগরিকেরই জানা নেই। আমরা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করেছি ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট এর পরিবর্তে নোটারি সার্টিফিকেট দিয়ে ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশনের আইনি প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অনেকেই অনুধাবন করতে পারেননি। "

এই ম্যারেজ অফিসার আরো বলেন " ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড পরিবর্তনের সময় ম্যারেজ সার্টিফিকেট অবিলম্বে বাধ্যতামূলক করতে হবে, তবেই নোটারি শংসাপত্র অপ্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বহীন হয়ে যাবে।"কেন্দ্রের আইন মন্ত্রকের সার্কুলার উল্লেখ করা হয়েছে, যে সমস্ত নোটারি বিয়ের সার্টিফিকেট ইস্যু করছেন, তাদের বিরুদ্ধে পেশার অধিকারের অপব্যবহার করার ধারা দেওয়া হবে।বিয়ের পাশাপাশি কোন কোন লটারি ডিভোর্স সংক্রান্ত সার্টিফিকেট প্রদান করছেন। দুটো শংসাপত্রই নোটারিদের অধিকার বহির্ভূত।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইন মন্ত্রক সম্প্রতি রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে ও ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন অফিসে প্রচারের জন্য একটি ফেস্টুন পাঠিয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে বিবাহ নিবন্ধীকরণ আবশ্যিক করা হয়েছে। নতুন ঠিকানায় ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করতে এটি আবশ্যিক।

কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারের নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ছাড়াই, ভোটার ও আধার কার্ডের আপগ্রেডেশন এখনো কিভাবে হচ্ছে, এই নিয়ে  পশ্চিমবঙ্গের ম্যারেজ অফিসাররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

No comments