Latest Breaking

বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে জাতীয়তাবাদ ও মূল্যবোধের বিকাশ ঘটাতে উদ্যোগী মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থা

 

বঙ্গপ্রদেশ : বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে জাতীয়তাবাদ  ও মূল্যবোধের বিকাশ ঘটাতে উদ্যোগী মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থা ।

গত রবিবার 7 সেপ্টেম্বর  ঋষি রাজনারায়ণ বসুর দ্বিশত জন্মবর্ষ বর্ষব্যাপী পালনের শুভ সূচনা অনুষ্ঠানে  '' *জাতীয়তাবাদের পিতামহ''-ঋষি রাজনারায়ণ বসু", "কথামালার কথা" এবং "মুক্তি যুদ্ধে মেদিনীপুর* " এই তিনটি  পুস্তক প্রকাশিত হয়।  বর্তমান প্রজন্মের কাছে জাতীয়তাবাদ  ও মূল্যবোধের বিকাশ ঘটাতে এই উদ্যোগ নিয়েছে মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থা ।

 একদা মেদিনীপুর কলেজিয়েট হাইস্কুল (তৎকালীন মেদিনীপুর জিলা হাইস্কুল)-এর প্রধান শিক্ষক, জাতীয়তাবাদের পিতামহ, ঋষি রাজনারায়ণ বসুর দ্বিশত জন্মবর্ষ বর্ষব্যাপী পালনের শুভ সূচনা মেদিনীপুর শহরে রেডক্রস সোসাইটির সভা গৃহে সাড়ম্বরে উদযাপিত হল। মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থার উদ্যোগে গঠিত ঋষি রাজনারায়ণ বসু দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটি এই সভার আয়োজন করে। রাজনারায়ণ বসুকে কেন্দ্র করে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে জাতীয়তাবাদ নিয়ে ধারণা সৃষ্টি ও মূল্যবোধের বিকাশের প্রচেষ্টা এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য বলে উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ করেন। 

সভায় রাজনারায়ণ বসুর জীবন ও জাতীয়তাবাদের উন্মেষ নিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ইতিহাসবিদ অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক প্রবোধ চন্দ্র সিনহা, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন রবীন্দ্র অধ্যাপক ড. অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য, গৌড় বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. গোপাল চন্দ্র মিশ্র। সভায় অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে বহু জ্ঞানী গুণী মানুষের সমাবেশে সফলতা লাভ করে  সভাটি। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক মন্মথনাথ দাস। দেশাত্মবোধক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সভার পরিবেশকে ভিন্ন মাত্রা দান করে।

     প্রথমে সংস্থার ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করেন সংস্থার সভাপতি। সেই সময় সংস্থাকে নিয়ে লেখা একটি গান পরিবেশিত হয়। তারপর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়।   সম্মাননীয় অতিথিদের চন্দনের ফোঁটা, ব্যাজ, উত্তরীয়, ফুলের গাছ দিয়ে বরণ করা হয়। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন শ্রীমতী ঝুমঝুমি চক্রবর্তী।ঋষি রাজনারায়ণ বসুর প্রতিকৃতিতে ও  প্রাতঃস্মরণীয় পণ্ডিত ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর , বীরাঙ্গনা মাতঙ্গিনী হাজরা, দেশ প্রাণ বীরেন্দ্র নাথ শাসমল, অগ্নিকিশোর শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়।

      রাজনারায়ণ বসুকে কেন্দ্র করে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে জাতীয়তাবাদ নিয়ে ধারণা সৃষ্টি ও মূল্যবোধের বিকাশের প্রচেষ্টা এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য বলে উদযাপন কমিটির *মুখ্য সম্পাদক অধ্যাপক হৃষীকেশ পড়্যা* তাঁর স্বাগত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

 *সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শ্যামাপদ জানা* তাঁর বক্তব্যে সংস্থা গঠনের গোড়ার কথা ও উদ্দেশ্য, সংস্থার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড, দুঃস্থ ও মেধাবী ছাত্র- ছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা, চিকিৎসা পরিষেবা ও মেদিনীপুর ভবন সংক্রান্ত পরিষেবা প্রভৃতি বিষয় সংক্ষেপে উল্লেখ করেন। 

রাজভবন থেকে প্রেরিত শুভেচ্ছা বার্তা পাঠ করেন সংস্থার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শ্রী রতিকান্ত মালাকার । উদযাপন কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ড. সুজন কুমার বালা অতিথিদের পরিচয় করিয়ে দেন।

      প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন এবং পরে সভায় ঋষি রাজনারায়ণ বসুর জীবন ও জাতীয়তাবাদের উন্মেষ নিয়ে বক্তব্য রাখেন সংস্থার উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ইতিহাসবিদ অবসরপ্রাপ্ত *অধ্যাপক প্রবোধ চন্দ্র সিনহা।* 

ঋষি রাজনারায়ণ বসুর বিস্তৃত কর্মকাণ্ড কে নিয়ে গবেষণাধর্মী আলোচনা করেন বিশ্বভারতীর *প্রাক্তন রবীন্দ্র অধ্যাপক ড. অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য* । উদযাপন কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা গৌড় বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য *ড. গোপাল চন্দ্র মিশ্র* তাঁর বক্তব্যে মেদিনীপুরের তৎকালীন শিক্ষা ব্যবস্থায় ও জাতীয়তাবোধের উন্মেষে  ঋষি রাজনারায়ণ বসুর ভূমিকা তুলে ধরেন। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তথা উদযাপন কমিটির কার্যকরী সভাপতি শ্রদ্ধেয় *অধ্যাপক প্রণবেশ জানা* শুভেচ্ছা জানান ও সবার মধ্যে সমন্বয়ের কথা বলেন।

     এই অনুষ্ঠানে  '' *জাতীয়তাবাদের পিতামহ''-ঋষি রাজনারায়ণ বসু", "কথামালার কথা" এবং "মুক্তি যুদ্ধে মেদিনীপুর* " এই তিনটি  পুস্তক প্রকাশিত হয়।

      সভায় অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও কলকাতা , হাওড়া সহ বিভিন্ন জেলা থেকে বহু জ্ঞানী গুণী মানুষের সমাবেশে এবং  বিদ্যালয় -মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগগ্ৰহণে সফলতা লাভ করে সভাটি। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার তথা উদযাপন কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক *শ্রী মন্মথনাথ দাস* । ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মেদিনীপুর টাউন আঞ্চলিক ইউনিটের সভানেত্রী প্রাক্তন বিচারক অঞ্জলী সিনহা।

    অনুষ্ঠানের মাঝে মাঝে মেদিনীপুর টাউন আঞ্চলিক ইউনিট, কাঁথি-এগরা আঞ্চলিক ইউনিট ও বেলদা আঞ্চলিক ইউনিটের দেশাত্মবোধক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সভার পরিবেশকে ভিন্ন মাত্রা দান করে। এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে মেদিনীপুর টাউন আঞ্চলিক ইউনিট এবং সমগ্ৰ অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও সঞ্চালনায়  ছিলেন সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির *যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ অরূপ কুমার দাস* । 

      প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায় গত *৬ সেপ্টেম্বর'২৫ শনিবার*  সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরে মেদিনীপুর টাউন আঞ্চলিক ইউনিটের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য মশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়। যেটি প্রায় একশত জনের অংশগ্ৰহণে মেদিনীপুর কলেজের সামনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তির পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল, অলিগঞ্জ ঋষি রাজনারায়ণ বসু বালিকা বিদ্যালয়, ঋষি রাজনারায়ণ বসু স্মৃতি পাঠাগার সহ শহরের বিভিন্ন স্থান পরিক্রমা করে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে এসে শেষ হয়। ৭ সেপ্টেম্বর'২৫  সকাল সাতটার সময় ঋষি রাজনারায়ণ বসুর স্মৃতি বিজড়িত উপরোল্লিখিত তিনটি  স্থানে ঋষি রাজনারায়ণ বসু  এবং অন্যান্য মণীষীদের মূর্তিতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

    মূল অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো ।প্রায় ২৫০ জন উপস্থিত ছিলেন। গৌরবময় উপস্থিতি *ড.* *গোপাল চন্দ্র মিশ্র* ( প্রাক্তন উপাচার্য), *ড. বিমল চন্দ্র মাল* (প্রাক্তন উপাচার্য), *ড. রামচন্দ্র মন্ডল* (প্রাক্তন বিধায়ক ও কৃষি বিজ্ঞানী), *প্রাক্তন অধ্যক্ষা শিখা মাইতি* (কার্যাকরী সভাপতি), *ড. গৌর গোপাল মাইতি* (প্রাক্তন  কার্যাকরী সভাপতি ),  প্রাক্তন  অধ্যক্ষ *ড.নারায়ন* *চন্দ্র মাইতি,* *ড.* *গোলক মাঝি* ও বরেন্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানগুলি সার্বিক সাফল্যের জন্য যাঁদের অবদান অনস্বীকার্য তাঁদের মধ্যে উদযাপন কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য মৃত্যুঞ্জয় খাটুয়া, সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রী দেবী প্রসাদ নন্দী, শ্রী অমিতাভ দাস, ডঃ মিলন কুমার সরকার এবং  আঞ্চলিক ইউনিটের সুদীপ কুমার খাঁড়া ও অন্যান্য সদস্য -সদস্যবৃন্দ।

No comments