Latest Breaking

লোকসভা ভোটের আগেই, মোদীকে টেক্কা দিলেন মমতা


সোমনাথ মুখার্জী, চন্দন পাত্র ও অর্পিতা বিশ্বাস, নিউজ্ বেঙ্গল টুডে, কলকাতা : প্রার্থী তালিকায় বঙ্গ বিজেপির কোন চমক নেই। উল্টে কোন্দল আছে। তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির নেতাকে প্রার্থী করে  মুখ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন অমিত সাহ। উল্টো দিকে দলের বড় ভাঙন রুখে দিয়ে ভোটের আগেই মোদীকে টেক্কা দিলেন মমতা। রাজনৈতিক মহলের মতে, সিপিএমের ভোট কেটে তলানিতে নামাতে পারলে বাংলায় তৃনমূলকে টক্কর দিতে পারবে বিজেপি। ২০১৪ সালে বিজেপির যে হাওয়া ছিল এবার ঝড় তুলতে  পারলনা প্রথম দফার প্রার্থী  তালিকা। কেউ কেউ বলছেন বাংলায় ডুবন্ত জাহাজ এখন বিজেপি, তাই হেবিওয়েটরা প্রার্থী  হতে রাজী হয়নি।
বিজেপির প্রথম দফার তালিকা দেখে শাসক শিবিরে কোন তাপ উওাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।মেদিনীপুর,আলিপুরদুয়ার,কোচবিহার,দমদম ও বীরভূমের মতো আসন নিয়ে জেলাস্তরে চর্চা হচ্ছে। বিজেপির প্রার্থী তালিকায় থাকা বেশিরভাগই নামেরই রাজনৈতিক পরিচিতি বা ওজন বলার মতো নয়।পরিচিতি রাজনৈতিক মুখও সব প্রথম দফার তালিকাতেই হাজির। বাকি আসন বিজেপি কাদের দিয়ে ভরাবে,সে চর্চা কিন্তুু চলছে তৃণমূলের অন্দরে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সাফ জানিয়ে দিলেন ওস্তাদের আমার শেষ রাতে।আমরা তৈরী প্রার্থীর নাম ঘোষনা হলেই ময়দানে প্রচারে নেমে পড়ব। রাজনৈতিক মহলের একাংশের খবর বিজেপি যোগ্য প্রার্থী খুঁজতে হিমসিম।যাদের নাম প্রার্থী হিসাবে উঠেছে তাদেরকে নিয়ে অন্দর মহলে অনেক সমস্যা রয়েছে।2019 লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ কোন সেলিব্রেটিকে বিজেপিতে যোগ দিতে দেখা গেল না।কেননা 2014 লোকসভা ভোটে বিশিষ্ট সংগীতকার বাপি লাহিড়ী শ্রীরামপুর,নিমু ভৌমিক রায়গঞ্জ আর পি সি সরকার বারাসাত থেকে বিজেপি প্রার্থী  হয়ে ছিলেন।সর্ব ভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ছিলেন কুমার শানু এবং টেলি তারকা অঞ্জনা বসু।এনারা সবাই বর্তমানে বিজেপির সাথে সবরকম সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন সি পি এম ও কংগ্রেস।কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন বিজেপিতে ভারতবর্ষের এবং বাংলার সংগীত শিল্পী,তারকারা এবং সমাজের প্রতিষ্ঠিত মানুষেরা যোগদান করেছিল।শুধু বাবুল সুপ্রিয় ছাড়া তারা কেউই বর্তমানে বিজেপির সাথে যুক্ত নয়।কারণ তারা আশা করেছিল যে,প্রত্যাশা ছিল বিজেপি নতুন ভারত গড়ার কথা ছিল।সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তারা আশাহত হয়ে দল ছেড়েছে। এর ফলে তারকা মহলে যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। নতুন কোনও তারকাকে সেইভাবে এগিয়ে আসতে লক্ষ্য করা যায়নি।তৃনমূল কংগ্রেস যথেষ্ট একটি শক্তিশালী দল।যাদের অন্দর মহল মজবুত এবং প্রার্থীদের নিয়ে আশাবাদী।তাই বিজেপি শাসক দল তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা তুলনায় টক্কর দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ।



তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় নতুন-পুরনোর জমকালো মিশেলে আছে। সুদীপ ব্যানার্জি, সৌগত রায়, সুব্রত মুখার্জী দের মতো বাঘা খেলোয়াড়দের পাশাপাশি নুসরত-মিমি-দেব, এই ত্রয়ীর তারকা বিচ্ছুরণের সামনে বঙ্গ বিজেপির দিলীপ ঘোষ, রাহুল  সিন্হা, শমীক ভট্টাচার্যেরা চূড়ান্ত নিষ্প্রভ। গত লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের পশ্চিমবঙ্গের জন্য এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকাই নেই, বিজেপির অতি বড় নিন্দুকের কাছেও বোধহয় বিশ্বাসযোগ্য নয়। অথচ বাস্তব এটাই যে প্রচার দুর অস্ত বরং বঙ্গ বিজেপি ব্যাস্ত তাদের দলীয় কোন্দল সামলাতে।

বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ্ (যিনি নিজে এবার গুজরাত গান্ধীনগর কেন্দ্র থেকে লড়ছেন) বারবার দাবী জানিয়ে আসছিলেন যে এবারের নির্বাচনে বাংলা থেকে ২০-২২টি আসন তাঁরা পাবেন। কিন্তু তৃণমূল ফেরত প্রার্থীর আশায় যে দল তীর্থের কাকের মতো বসে থাকে তারা  খেলার শুরুতেই যে কার্যত 'ওয়াকওভার' দিয়ে দিচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিছু  বিক্ষুব্ধ তৃণমূলী, সৌমিত্র খান, অনুপম হাজরা, ভারতী ঘোষকে দিয়েই ঘুঁটি সাজাবার চেষ্টা করার পাশাপাশি কোচবিহার কেন্দ্রে নিশীথ প্রামাণিক, বসিরহাট কেন্দ্রে সায়ন্তন বসু র 'বহিরাগত' তকমা ঘোচাতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। অন্যদিকে প্রচারে ঝড় তুলে দিয়ে   তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি তাঁর বিজেপি বিরোধী ভাবমূর্তি উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করছেন এবং জনগণের কাছে তাঁর  বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়িয়ে জাতীয় রাজনীতি তে নিজেকে দ্রুত প্রাসঙ্গিক করে তুলছেন তিনি।

No comments