যাদবপুর রম্যানীর রমাপ্রসাদ স্মরণ
সোমনাথ মুখার্জী, নিউজ্ বেঙ্গল টুডে, কলকাতা : অকাল প্রয়াত স্বনামধন্য নাট্য ব্যক্তিত্ব অভিনেতা রমাপ্রসাদ বণিকের স্মরণে এক ভাবগম্ভীর অথচ রমণীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করল যাদবপুর রম্যানী, ১৪ ই মার্চ জীবনানন্দ সভাঘরে। নাট্যগোষ্ঠী যাদবপুর রম্যানীর সদস্যরা কম বেশি সকলে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত এবং অনেকেই রমাপ্রসাদের হাতে তৈরি নাট্যকর্মী।
এদিন তাদের ৫-ম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে রমাপ্রসাদ বণিকের নামাঙ্কিত স্মারক সম্মান ও স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছিল এই সাংস্কৃতিক সংগঠনটি। প্রথমে প্রয়াত অভিনেতার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও সমবেত কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব দেবাশিস মজুমদার, স্মারক সম্মান তুলে দেন স্বনামখ্যাত অভিনেতা বিশ্বজিত চক্রবর্তীর হাতে। রম্যানীর সম্পাদক মুকেশ চক্রবর্তী তাঁর প্রাক কথনে জানান যে, এই সম্মান প্রথম বছর পেয়েছিলেন থিয়েটার জগতের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র মেঘনাদ ভট্টাচার্য এবং গত বছর পেয়েছিলেন আর এক নক্ষত্র, বর্তমানে রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
সম্মান প্রাপক বিশ্বজিত চক্রবর্তী, স্বল্প কথায় তাঁর ও রমাপ্রসাদের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যের কথা বলেন। বলা ভালো যে টুকরো টুকরো কথার কোলাজ তৈরি করেন।
'বাংলা নাটক ও সাম্প্রতিক দর্শক'- শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দিতে উঠে থিয়েটার ও সিনেমা জগতের অপর এক দিকপাল, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গৌতম হালদার উল্লেখ করলেন বিভিন্ন সময়ের সামাজিক পটভূমিকায় নাটকের ভূমিকা। তিনি বলেন, একমাত্র থিয়েটারই পারে প্রত্যক্ষভাবে দর্শকের মর্মে কিছু বার্তা পৌঁছে দিতে। থিয়েটারের অন্যতম মহীরুহ শম্ভু মিত্রের ছাত্র গৌতম হালদার টেনে আনেন বিশ্বায়ন, সাংস্কৃতিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দখল নীতি, বাজারি অনুশাসন বা 'ব্র্যান্ড ভ্যালু'-র মতো বিষয়, যেখানে নিজস্বতা হারিয়ে একটা ঘেরাটোপের মধ্যে পড়ে শিল্পী ও দর্শক উভয়েই প্রভাবিত। গৌতমবাবু ও দেবাশিসবাবু, দুজনেই বলেন-"প্রতি মুহূর্তে কিছুর অনুসন্ধান হল থিয়েটার, আর আধুনিক নাটকে এই অনুসন্ধিত্সার অভাব বড়ই প্রকট।"
রম্যানীর অন্যতম সদস্য কবি অমিত চক্রবর্তী পাঠ করলেন স্বরচিত কবিতা যা প্রশংসার দাবী রাখে। সমগ্র অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় দেবলীনা চক্রবর্তী অসাধারণ। সংগঠন সূত্রে জানা গেল আগামী দিনে যাদবপুর রম্যানী একটি থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করতে চলেছে।।

No comments