চাকরি নেই, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে উৎসাহ কমছে, কলেজ খুলে উদ্যোগপতির আক্ষেপ
অর্পিতা বিশ্বাস, কৃষ্ণনগরঃ এন জি ওর মাধ্যমে গড়ে তুললেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা নরেশ দাস । আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত উদ্যোগপতি ।
নরেশ বাবু জানালেন - ভালবেসে এটাকে বেছে নিয়েছি ঠিকই কিন্তু কারন ও আছে সেটা হল -এলাকায় বিশেষ করে নদীয়া জেলায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নেই বললেই চলে । একমাত্র কল্যাণীতেই আছে । তাছাড়া কৃষ্ণনগর থেকে বহরমপুর পর্যন্ত কোন কলেজ নেই । এখানকার যারা অনগ্রসর আছে তাদের বাইরে গিয়ে পড়ার ক্ষমতা নেই । তাদের জন্যই এই প্রতিষ্ঠানটি করা । এই পেশায় আমি ১০বছর যুক্ত আছি । এটা প্রথম নয় অন্য ব্যবসা করতাম বা এখন ও করি (ফার্টিলাইজারের )। এই পেশায় ২০০জনের কর্মসংস্থান হচ্ছে । এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু কলেজ নয় তার পাশাপাশি স্কুল
(নার্সারি থেকে টেন পর্যন্ত) গড়ে তোলা হয়েছে ।
তিনি জানালেন -ছোটবেলা থেকেই উদ্যোগী ছিলাম বলেই এই পেশায় এসেছি । চাকরির চেষ্টা ও করেছিলাম কিন্তু পায়নি । আমার বয়স- ৬২বছর ,শিক্ষাগত যোগ্যতা -উচ্চমাধ্যমিক পাশ। আমি এই পেশায় খুবই খুশি । নতুন কিছু গড়ে তুলি এই পরিকল্পনা সবসময় রয়েছে ।
উদ্যোগপতি জানালেন -এই পেশায় প্রচুর সমস্যা আছে। যেমন -ইঞ্জিনিয়ারিং এ কেউ ভর্তি হতে চায় না । কারন চাকরি নেই বলে সব পড়তে অনীহা । আজ হোটেল ম্যানেজমেন্ট এগুলিতে পড়ার জন্য ছাএ-ছাএী পাওয়া যায় । সরকারের কাছে কোন প্রত্যাশা নেই । তবে সেলফ্ ফাইনান্স কলেজে যাতে চাকরির ব্যবস্থা করা যায় তাহলে আরও সুবিধা হবে । ছোট ছোট ছাএ ছাএীরা যারা পাশ করে বেরোচ্ছে তারা চাকরিটা পেলে আমাদের এখানে ভর্তিটা ভাল হবে ।
নরেশ বাবুর তেমন কোন সখ নেই। তবে এন জি ওর সাথে যুক্ত আছেন । সারাদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাজে যুক্ত থাকতে হয় ।ছেলে তাকে সাহায্য করেন।
তিনি আর ও জানালেন -দায়িত্বের মধ্যে এসে গেছে কোন স্কুলের বা কলেজের কি সমস্যা তার মধ্যে থেকেই এনার্জি পায় । কর্মের মধ্যে থেকেই মনকে সতেজ রাখি । বাড়িতে - স্ত্রী,দুই মেয়ে ,একছেলে আছে । বড়মেয়ে বিবাহিত । কৃষ্ণনগরে হয়তো কোথাও মেলা হল তখন সময় দেওয়া হয় । তবে বছরে একবার বাইরে বেড়াতে যাই ।
উদ্যোগপতি জানালেন -একঘেয়েমি এসে গেলে টিভি দেখি । নতুনদের জন্য - যারা বেকার আছে তাদের বলব এই পেশায় আসতে । যেমন ধরুন-ক্যাটারার । এই কাজটা ও করলে দেখা যায় ১০থেকে ১৫জনের সংসার চলে যায় । তাই চাকরির জন্য ভরসা না করে আমি চাই তারা এগিয়ে আসুক ব্যবসা করুক ।
তাছাড়া আমি চাইলেই তো আর রতন টাটা হতে পারব না । ক্যাপ্যাসিটির মধ্যে থাকতে হবে । যেটা করতে পারবে সে হিসেবে চিন্তা করতে হবে । তারজন্য কারোর কাছে থেকে সাজেশন নিতে বা কিছু করতে পারে ।
নরেশ বাবু জানালেন - যেমন ক্যাটারার ব্যবসায় কোন মূলধন লাগেনা। তাই তারা যদি এইভাবে আসতে পারে ঠিকমত কাজ করে তাহলে একদিন তারা এগিয়ে যেতে পারবে । রাত ১১টার পর পরিবারকে সময় দিই । তারা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে ।
আমার ফার্টিলাইজারের ব্যবসা আছে তাতেই সংসার চলে যায় । কিন্তু এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটা সমাজসেবা হিসেবে বেছে নিয়েছি যা আমাকে আর ও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে ।

No comments