Latest Breaking

ভিন্ন পেশার লোকও ঢাক বাজাতে আসায় কর্মসঙ্কটে ঢাকিরা



সংবাদদাতা, গলসি : মহালয়ার পর ঢাকিদের পাড়ায় পাড়ায় ঢাক বাজানোর মহড়া চলছে জোরকদমে। পুজো যত এগিয়ে আসছে, রেওয়াজের সময় ততই বাড়ছে। এবারও গলসির বেলান, মেরুয়াল প্রভৃতি গ্রামের ঢাকিরা পুজো মণ্ডপে ঢাক বাজানোর বায়না পেয়ে গিয়েছেন।

এইসব এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন ঢাকি এবারও রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঢাক বাজাতে যাচ্ছেন। তবে, এসবের মাঝেও বংশপরম্পরায় ঢাকিদের উদ্বেগ বেড়েছে ভিন্ন পেশার লোকজন ঢাক বাজাতে চলে আসায়। ঢাকিরা বলেন, ফাটকা উপার্জনের আশায় এখন ঢাক বাজাতে ভিন্ন পেশার লোকজন আসছে। ফলে সমস্যায় পড়ছেন বংশপরম্পরায় ঢাক বাজিয়ে আসা ব্যক্তিরা।

গলসির মেরুয়াল, বেলান প্রভৃতি গ্রামে প্রায় একশো ঢাকির পরিবার রয়েছে। ঢাক বাজানোয় এই এলাকার ঢাকিদের বেশ সুনাম। ঢাকিদের পাড়ায় দেখা গিয়েছে, কোথাও চলছে ঢাক বাজানোর মহড়া, কেউ কেউ ঢাকের চামড়ায় টান দেওয়ার কাজ করছেন। মেরুয়ালের মনসাতলায় ঢাক বাজাচ্ছিলেন লক্ষ্মণ রুইদাস, মনসা রুইদাস ও গদাই রুইদাস। তাঁরা বলেন, এখন সারাদিনে দফায় দফায় ঢাক বাজানোর মহড়া চলছে। বিশ্বকর্মা পুজো থেকে আমাদের ঢাক বাজানোর মহড়া শুরু হয়ে যায়।

তারপর পুজো যত এগিয়ে আসে, তত বেশি করে ঢাক বাজানোর অনুশীলন করতে হয়। তাঁরা বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষদেরও পেশা ছিল ঢাক বাজানো। পুজো, উৎসব, অনুষ্ঠানে ঢাক বাজিয়ে যা আয় হয়, মূলত তার উপর নির্ভর করেই আমাদের সংসার চলে। এর বাইরে আমরা দিনমজুরের কাজ করি। দুর্গাপুজোর সময় আমাদের বেশি আয় হয়।

বেলান গ্রামের কার্তিক রুইদাস, মেরুয়ালের সন্ন্যাসী রুইদাস, লক্ষ্মীনারায়ণ রুইদাস বলেন, পুজোয় এখানকার ঢাকিরা কলকাতা, ধানবাদ, গুজরাত, রাঁচি প্রভৃতি এলাকায় ঢাক বাজাতে যান। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কার্তিকবাবু বলেন, বেলান গ্রাম থেকে এবার প্রায় ১৫জন ঢাকি রাজ্যের বাইরে ঢাক বাজাতে যাচ্ছেন।

বাইরে ঢাক বাজাতে গেলে প্রায় দ্বিগুণ আয় হয়। এখানে পাঁচহাজার টাকা আয় হলে বাইরে গেলে ১০হাজার টাকা পাওয়া যায়। তাঁরা বলেন, এখন সরকার ঢাকিদের ভাতা দিচ্ছে। তবে, ঢাকের বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। তাই ঢাক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য খরচ বেড়েছে। এর উপর ঢাক বাজাতে এখন ভিন্ন পেশার লোকজন চলে আসায় সমস্যা বেড়েছে।

No comments